নাগরিক পার্টি : নতুন পার্টি, পুরোনো রাজনীতি
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পট পরিবর্তন হয়। এর প্রেক্ষাপটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতৃত্বদের একাংশ সাম্রাজ্যবাদের অনুগত, সেনা সমর্থিত ইউনূস সরকারের অন্তভুর্ক্ত হয়। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থান ছাত্র-তরুণদের মাঝে নতুন আকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয়। ছাত্র উপদেষ্টাদের মদদে নয়া বন্দোবস্তের নামে নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃত্বদের একাংশ।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরই শাসকশ্রেণির ‘তৃতীয় শক্তি’র পক্ষ থেকে “ছাত্র রাজনীতি বন্ধ” করার রব তোলে স্কুল-কলেজগুলোতে। অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বদের একাংশ সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতির বিকাশের পথকে উন্মুক্ত করার জোরালো দাবির পরিবর্তে বরং ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষেই নানানভাবে অবস্থান নেয়। অথচ তারা গত সেপ্টেম্বর ’২৪-এ জুলাই গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের সংস্কার নিশ্চিতকরণ ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য সংবিধান সভা নির্বাচনের পক্ষে জনমত তৈরিতে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ নামে একটি প্লাটফর্ম দাঁড় করায়। মুখে অরাজনৈতিক বলা হলেও কার্যত রাজনৈতিক প্লাটফর্মটি দাঁড় করানো হয়। তারা এমনও বলে যে রাজনৈতিক পার্টি গড়ে তোলার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। তারা শুধু জুলাই অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে সংগ্রাম করে যাবেন, তারা একটি প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবেনÑ ইত্যাদি। এগুলো ছিল ছাত্র-জনতার সাথে প্রতারণার সামিল।
বাস্তবে দেখা গেল, অল্প কিছু দিন পার না হতেই তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে, রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে রাজনৈতিক দল (কিংস পার্টি) গঠনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়। এবং ৬ মাস বিরাজনীতিকরণের গীত গেয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে ছাত্র-উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেন। এবং মাত্র ২/১দিন পরেই তাকে প্রধান করেই রাজনৈতিক দল “জাতীয় নাগরিক পার্টি” গঠন করা হয়।
সাম্য, ন্যায়বিচার, সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র বাস্তবায়ন করাই নাকি এই পার্টির লক্ষ্য। তারা দাবি করছে তারা বামপন্থিও না, ডানপন্থিও না, তারা হচ্ছেন মধ্যপন্থি। বহুত্ববাদই তাদের আদর্শ। এসব বক্তব্য পশ্চিমি বুর্জোয়া রাজনীতির একটা ভার্সান ব্যতীত আর কিছু নয়। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তাদের বুর্জোয়াশ্রেণির রাজনৈতিক চরিত্রই প্রকাশিত। তারা বলেছেন তারা ভারত-পন্থি নয়, পাকিস্তান-পন্থিও নয়। বেশ তো, তাহলে তারা কি সাম্রাজ্যবাদ-পন্থি? তারা যে সেটাই তা কি তারা ইউনূসের মতো পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের অতিপ্রিয় একজন ব্যক্তিকে ডেকে আনার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেনি? তারা কি ইউনূসের সাথে আমেরিকা গিয়ে সেখানকার এক পালের গোদা ইউনূসের বন্ধু বিল ক্লিনটনের আশীর্বাদে ধন্য হয়নি?
মুখে তারা যা-ই বলুক, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে, পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের অনুমোদিত এক বুর্জোয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং যেকোনো মূল্যে চলমান রাষ্ট্র ক্ষমতার অংশীদার হওয়া। পারলে সরকার গঠন করা বা অন্তত প্রধান বিরোধী দল হওয়া। সাম্রাজ্যবাদ নতুন বোতলে পুরোনো মদ পরিবেশন করতে সিদ্ধহস্ত। আওয়ামী লীগ কুপোকাত, বিএনপি-কেও দেখা হয়েছে। তাই, এই নতুন বোতলটি সাম্রাজ্যবাদও দেশে চায়।
তাদের সংস্কারের জন্য নির্বাচন পেছানোর দাবি মূলত নিজেদের দল গুছানোর সময়ক্ষেপণ মাত্র। তারা দাবি করছে তারা সরকারের অংশ নয়, স্বতন্ত্র একটি পার্টি। কিন্তু বাস্তবচিত্র ভিন্ন। তাদের দু’জন ছাত্র-নেতা এখনও উপদেষ্টা পদে বহাল রয়েছেন। গত আট মাসে তারা সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তেই হস্তক্ষেপ এবং নিয়ন্ত্রণ করেছে। কখনও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে, আবার কখনও জাতীয় নাগরিক কমিটির নামে, এখন ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র নামে। সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহকে পুলিশ হেলিকপ্টারও ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। সরকার-প্রশাসনের সাথে লিঁয়াজো করেই তারা অগ্রসর হচ্ছে।
তারা বিভিন্ন “সেবামূলক” কাজে নিয়োজিত রয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে দেখা যায় গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন করতে। কিন্তু তার অর্থায়ন কীভাবে হচ্ছে, দেশের জনগণের মনে সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বিমূর্তভাবে বলেন বিভিন্ন ধনী ব্যক্তিরাই তাদের অর্থায়ন করে থাকে। এই ধনী ব্যক্তিরাই হাসিনার ফ্যাসিবাদকে পাকাপোক্ত করতে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছিল। এখন তাদেরও অর্থ দিচ্ছে। এসবই তাদেরকে ধনীশ্রেণির ‘কিংস পার্টি’’ হিসেবেই প্রমাণ করছে।
তারা ’২৪-এর গণহত্যাকারী হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, তাদের বিচারের দাবি তুলছে। একই সাথে তারাই আবার ’৭১-এর গণহত্যাকারী জামাত-শিবিরকে পুনর্বাসন এবং বহুত্ববাদের নামে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদকে বিকশিত করার সুযোগ তৈরি করছে। “জাতীয় নাগরিক পার্টি”তেও ছাত্রলীগ এবং শিবিরকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। হাসিনা-আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মূল উৎপাটন তথা তাদের জমি-সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কোনো দাবিই তারা তুলছে না। এভাবে তারা নিজেদেরকে শাসক বুর্জোয়া শ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী একটি দল হিসেবে নিজেদেরকে প্রমাণ করছে।
এই পার্টির গঠন প্রক্রিয়ায় শ্রমিক শ্রেণির বিপ্লবী রাজনীতির কোনো অবস্থান নেই। শ্রমিক-কৃষক-আদিবাসী-নারীসহ নিপীড়িত জনগণের মুক্তির কোনো কর্মসূচি নেই। তারাও বুর্জোয়া নির্বাচনে ক্ষমতায় গিয়ে ধনীশ্রেণির রাষ্ট্রব্যবস্থা রক্ষা করে ধনীক শ্রেণি ও বিদেশি শোষকদের স্বার্থই রক্ষা করবে। এবারের ঈদের আগে বকেয়া মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বেতন দেয়া নিয়ে ছাত্র-উপদেষ্টার প্রতারণামূলক বক্তব্য এবং ‘কিংস পার্টি’র শক্তিশালী কোনো ভূমিকা না থাকা তার উজ্জ্বল প্রমাণ।
এই ঘূণে ধরা বস্তাপচা রাষ্ট্রব্যবস্থা অক্ষত রেখে এবং শাসকবুর্জোয়া শ্রেণির অন্দর মহলে থেকে নতুন পার্টি খুলে সংস্কারের নামে কিছু চুনকাম করলে সেটা হবে একই শাসকশ্রেণির পুরানো রাজনীতিরই রকমফের। জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ নিত্যনতুন গড়ে উঠা পার্টিগুলো সেটাই করছে।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
নাগরিক পার্টি : নতুন পার্টি, পুরোনো রাজনীতি
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পট পরিবর্তন হয়। এর প্রেক্ষাপটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতৃত্বদের একাংশ সাম্রাজ্যবাদের অনুগত, সেনা সমর্থিত ইউনূস সরকারের অন্তভুর্ক্ত হয়। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থান ছাত্র-তরুণদের মাঝে নতুন আকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয়। ছাত্র উপদেষ্টাদের মদদে নয়া বন্দোবস্তের নামে নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃত্বদের একাংশ।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরই শাসকশ্রেণির ‘তৃতীয় শক্তি’র পক্ষ থেকে “ছাত্র রাজনীতি বন্ধ” করার রব তোলে স্কুল-কলেজগুলোতে। অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বদের একাংশ সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতির বিকাশের পথকে উন্মুক্ত করার জোরালো দাবির পরিবর্তে বরং ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষেই নানানভাবে অবস্থান নেয়। অথচ তারা গত সেপ্টেম্বর ’২৪-এ জুলাই গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের সংস্কার নিশ্চিতকরণ ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য সংবিধান সভা নির্বাচনের পক্ষে জনমত তৈরিতে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ নামে একটি প্লাটফর্ম দাঁড় করায়। মুখে অরাজনৈতিক বলা হলেও কার্যত রাজনৈতিক প্লাটফর্মটি দাঁড় করানো হয়। তারা এমনও বলে যে রাজনৈতিক পার্টি গড়ে তোলার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। তারা শুধু জুলাই অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে সংগ্রাম করে যাবেন, তারা একটি প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবেনÑ ইত্যাদি। এগুলো ছিল ছাত্র-জনতার সাথে প্রতারণার সামিল।
বাস্তবে দেখা গেল, অল্প কিছু দিন পার না হতেই তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে, রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে রাজনৈতিক দল (কিংস পার্টি) গঠনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়। এবং ৬ মাস বিরাজনীতিকরণের গীত গেয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে ছাত্র-উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেন। এবং মাত্র ২/১দিন পরেই তাকে প্রধান করেই রাজনৈতিক দল “জাতীয় নাগরিক পার্টি” গঠন করা হয়।
সাম্য, ন্যায়বিচার, সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র বাস্তবায়ন করাই নাকি এই পার্টির লক্ষ্য। তারা দাবি করছে তারা বামপন্থিও না, ডানপন্থিও না, তারা হচ্ছেন মধ্যপন্থি। বহুত্ববাদই তাদের আদর্শ। এসব বক্তব্য পশ্চিমি বুর্জোয়া রাজনীতির একটা ভার্সান ব্যতীত আর কিছু নয়। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তাদের বুর্জোয়াশ্রেণির রাজনৈতিক চরিত্রই প্রকাশিত। তারা বলেছেন তারা ভারত-পন্থি নয়, পাকিস্তান-পন্থিও নয়। বেশ তো, তাহলে তারা কি সাম্রাজ্যবাদ-পন্থি? তারা যে সেটাই তা কি তারা ইউনূসের মতো পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের অতিপ্রিয় একজন ব্যক্তিকে ডেকে আনার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেনি? তারা কি ইউনূসের সাথে আমেরিকা গিয়ে সেখানকার এক পালের গোদা ইউনূসের বন্ধু বিল ক্লিনটনের আশীর্বাদে ধন্য হয়নি?
মুখে তারা যা-ই বলুক, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে, পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের অনুমোদিত এক বুর্জোয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং যেকোনো মূল্যে চলমান রাষ্ট্র ক্ষমতার অংশীদার হওয়া। পারলে সরকার গঠন করা বা অন্তত প্রধান বিরোধী দল হওয়া। সাম্রাজ্যবাদ নতুন বোতলে পুরোনো মদ পরিবেশন করতে সিদ্ধহস্ত। আওয়ামী লীগ কুপোকাত, বিএনপি-কেও দেখা হয়েছে। তাই, এই নতুন বোতলটি সাম্রাজ্যবাদও দেশে চায়।
তাদের সংস্কারের জন্য নির্বাচন পেছানোর দাবি মূলত নিজেদের দল গুছানোর সময়ক্ষেপণ মাত্র। তারা দাবি করছে তারা সরকারের অংশ নয়, স্বতন্ত্র একটি পার্টি। কিন্তু বাস্তবচিত্র ভিন্ন। তাদের দু’জন ছাত্র-নেতা এখনও উপদেষ্টা পদে বহাল রয়েছেন। গত আট মাসে তারা সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তেই হস্তক্ষেপ এবং নিয়ন্ত্রণ করেছে। কখনও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে, আবার কখনও জাতীয় নাগরিক কমিটির নামে, এখন ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র নামে। সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহকে পুলিশ হেলিকপ্টারও ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। সরকার-প্রশাসনের সাথে লিঁয়াজো করেই তারা অগ্রসর হচ্ছে।
তারা বিভিন্ন “সেবামূলক” কাজে নিয়োজিত রয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে দেখা যায় গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন করতে। কিন্তু তার অর্থায়ন কীভাবে হচ্ছে, দেশের জনগণের মনে সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বিমূর্তভাবে বলেন বিভিন্ন ধনী ব্যক্তিরাই তাদের অর্থায়ন করে থাকে। এই ধনী ব্যক্তিরাই হাসিনার ফ্যাসিবাদকে পাকাপোক্ত করতে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছিল। এখন তাদেরও অর্থ দিচ্ছে। এসবই তাদেরকে ধনীশ্রেণির ‘কিংস পার্টি’’ হিসেবেই প্রমাণ করছে।
তারা ’২৪-এর গণহত্যাকারী হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, তাদের বিচারের দাবি তুলছে। একই সাথে তারাই আবার ’৭১-এর গণহত্যাকারী জামাত-শিবিরকে পুনর্বাসন এবং বহুত্ববাদের নামে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদকে বিকশিত করার সুযোগ তৈরি করছে। “জাতীয় নাগরিক পার্টি”তেও ছাত্রলীগ এবং শিবিরকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। হাসিনা-আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মূল উৎপাটন তথা তাদের জমি-সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কোনো দাবিই তারা তুলছে না। এভাবে তারা নিজেদেরকে শাসক বুর্জোয়া শ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী একটি দল হিসেবে নিজেদেরকে প্রমাণ করছে।
এই পার্টির গঠন প্রক্রিয়ায় শ্রমিক শ্রেণির বিপ্লবী রাজনীতির কোনো অবস্থান নেই। শ্রমিক-কৃষক-আদিবাসী-নারীসহ নিপীড়িত জনগণের মুক্তির কোনো কর্মসূচি নেই। তারাও বুর্জোয়া নির্বাচনে ক্ষমতায় গিয়ে ধনীশ্রেণির রাষ্ট্রব্যবস্থা রক্ষা করে ধনীক শ্রেণি ও বিদেশি শোষকদের স্বার্থই রক্ষা করবে। এবারের ঈদের আগে বকেয়া মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বেতন দেয়া নিয়ে ছাত্র-উপদেষ্টার প্রতারণামূলক বক্তব্য এবং ‘কিংস পার্টি’র শক্তিশালী কোনো ভূমিকা না থাকা তার উজ্জ্বল প্রমাণ।
এই ঘূণে ধরা বস্তাপচা রাষ্ট্রব্যবস্থা অক্ষত রেখে এবং শাসকবুর্জোয়া শ্রেণির অন্দর মহলে থেকে নতুন পার্টি খুলে সংস্কারের নামে কিছু চুনকাম করলে সেটা হবে একই শাসকশ্রেণির পুরানো রাজনীতিরই রকমফের। জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ নিত্যনতুন গড়ে উঠা পার্টিগুলো সেটাই করছে।
আরও খবর
- শনি
- রোব
- সোম
- মঙ্গল
- বুধ
- বৃহ
- শুক্র